ঢাকা রবিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২

শেরপুরে ৬০০ হেক্টর রোপা আমনের জমি পানিতে নিমজ্জিত

দৈনিক নতুন সংবাদ সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫, ০১:০৭ পিএম শেরপুরে ৬০০ হেক্টর রোপা আমনের জমি পানিতে নিমজ্জিত

গত ৭২ ঘণ্টায় শেরপুরে বৃষ্টি না থাকায় আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। সব নদ-নদীর পানি কমে বিপৎসীমার নিচে নেমে গেছে। তবে ভেসে উঠতে শুরু করেছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। এখনও জেলার ৬০০ হেক্টর রোপা আমনের জমি পানির নিচে নিমজ্জিত।

 

২০ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি কমতে শুরু করলেও রাতে ভোগাই নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে নালিতাবাড়ীর নিচু এলাকায় প্রবেশ করে। তবে মধ্যরাতের পর আবারও তা নেমে বিপদসীমার নিচে চলে যায়।

এর আগে টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতীতে কাঁচা বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় অন্তত ১৫টি গ্রাম। ভেসে যায় ১১টি ঘরবাড়ি, অসংখ্য মাছের ঘের এবং প্রায় ১ হাজার ৬০০ হেক্টর রোপা আমনের জমি। বর্তমানে ৬০০ হেক্টর জমি এখনো পানির নিচে। এ ঢলে পানিতে ডুবে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড শেরপুর জেলা অফিসের ২১ সেপ্টেম্বরের তথ্য মতে, জেলার সব নদ-নদীর পানি এখন বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে শনিবার জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০২২ সালের ঢলে ব্রিজপাড়ের এই বাঁধ ভাঙলেও সংস্কার হয়নি। তাই এ বছরও একই জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত ঝিনাইগাতীর খৈলকুড়া এলাকার রহিমা বেগম বলেন, ঢলে বাড়িঘর সব নিয়ে গেছে। আবাদি জমির ওপর দিয়ে পলি পড়ে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ভিটে নাই, ঘর নাই, জমির ধান নাই। অসহায়ের মতো স্কুলে থাকছি, কিন্তু আর কয়দিন থাকব জানি না।

আরেক কৃষক খোকন বলেন, আমি ২৬ কাঠা জমি লাগাইছিলাম, ঢল আইসা সব জমি পলির নিচে গেছে। সরকার ৫ টাকা দিলে আমাদের খরচ হয় ৫০ টাকা। এভাবে প্রতিবছর ঢলে ক্ষতি হয়, আমাদের পিন্ডা কুলাচ্ছে না। আমরা মহারশি নদীর দুই পাড়ে বেরি বাঁধ চাই।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিষয়ে শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা নিয়মিত মাঠে আছি, স্টাফরা ছুটির দিনেও কাজ করছে। যে জমিতে পানির কাঁদা জমে আছে, সেখানে সাদা পানি দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। ৭২ ঘণ্টা পার হওয়ায় আজ আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করছি ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় শীতকালীন সবজি, পশুপালন ও ভর্তুকি বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাবো।

Side banner