মদিনার উত্তরাংশে অবস্থিত সায়্যিদ আশ-শুহাদা মসজিদ ইসলামী ইতিহাসের এক জীবন্ত সাক্ষী। এখানে নবী মুহাম্মদ (সা.)–এর ৭০ সাহাবি উহুদের যুদ্ধে শাহাদতবরণ করেন। আজও লাখো মুসলিম তাদের কবর জিয়ারত করতে ও সেই ঐতিহাসিক যুদ্ধক্ষেত্র দেখতে এই মসজিদে আসেন।
মসজিদটি উহুদ পাহাড়ের পশ্চিম দিকে অবস্থিত রুমাত পাহাড়ের মুখোমুখি। এখান থেকেই দেখা যায় উহুদের শহিদদের কবরস্থান ও তার আশপাশের নিদর্শনগুলো। নবী করিম (সা.)–এর সাহাবিদের ৭০ জন এখানে শহিদ হন, তাদের কবর রয়েছে এই মসজিদের পাশেরই শহিদ কবরস্থানে। এটি মসজিদে নববীর উত্তর প্রান্ত থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে।
২০১৭ সালের এপ্রিলে আধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই মসজিদটির আয়তন প্রায় ৫৪ হাজার বর্গমিটার। এতে একসঙ্গে ১৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের বাইরে রয়েছে নানান সেবা ও সুযোগ-সুবিধা।
ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, বদরের যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে কুরাইশ বাহিনী ও তাদের মিত্ররা মদিনার দিকে অগ্রসর হয়েছিল। নবী করিম (সা.) সাহাবিদের নিয়ে তাদের মোকাবিলায় প্রস্তুত হন। তিনি একদল তীরন্দাজকে রুমাত পাহাড়ে অবস্থান নিতে নির্দেশ দেন এবং বলেন, আমি অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত কেউ এখান থেকে নেমে আসবে না।
কিন্তু যুদ্ধ শেষে যখন কুরাইশরা পিছু হটতে শুরু করে, তখন কিছু তীরন্দাজ ভেবে নেন যুদ্ধ শেষ। তারা পাহাড় থেকে নেমে আসেন। এই সুযোগে তখনো ইসলাম গ্রহণ না করা খালিদ বিন ওয়ালিদ তার অশ্বারোহী দল নিয়ে হঠাৎ আক্রমণ করেন। এতে মুসলিম বাহিনীর বড় ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং নবী করিম (সা.)–এর চাচা হামজা (রা.)-সহ ৭০ জন সাহাবি শাহাদতবরণ করেন।
এই সাহাবিরা উহুদের পাদদেশে, রুমাত পাহাড়ের গোড়ায় সমাহিত হন। নবী করিম (সা.) তাদের কবর জিয়ারত করেছিলেন, আর আজও বিশ্বের নানা প্রান্তের মুসলমানরা সেই পথ অনুসরণ করে এখানে আসেন। অনেকেই পাহাড়ে উঠে যুদ্ধক্ষেত্রের দিকটি দেখে নবীজির যুগের সেই বেদনাময় ইতিহাস স্মরণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :