ঢাকা শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৪ আশ্বিন ১৪৩২

ফেনীতে নদী ভাঙনের কবলে বিদ্যালয়ের ভবন

দৈনিক নতুন সংবাদ আগস্ট ২৫, ২০২৫, ১১:৩৩ এএম ফেনীতে নদী ভাঙনের কবলে বিদ্যালয়ের ভবন

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায় কাটাখালী নদীর ভাঙনে মাতুভূঞা ইউনিয়নের করিম উল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ভাঙন অব্যাহত থাকায় যেকোনো সময় পুরো ভবনটি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বিদ্যালয়ের কয়েকটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

জানা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রহিম উল্যাহ চৌধুরীর দুই ছেলে তারেক মাহতাব রহিম ও জাবেদ সালাম রহিমের ব্যক্তিগত অর্থায়নে ২০১৬ সালে পাঁচকক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করা হয়। এ ভবনে সপ্তম শ্রেণির পাঠদান, নবম ও দশম শ্রেণির গ্রুপ বিষয়গুলোর পাঠদানসহ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ও ছাত্রীদের নামাজের স্থান রয়েছে।

সম্প্রতি ভারী বৃষ্টিপাতে ভবনের নিচ থেকে সরে গেছে মাটি। ভবনটির উত্তর পাশের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি ভবনের পাশে লাগোয়া শহীদ মিনারের বিভিন্ন অংশেও ফাটল দেখা দিয়েছে।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আদনান বিন আলম বলেন, ভবনটিতে দশম শ্রেণির গ্রুপ বিষয়গুলোর পাঠদান চলে। কখন পুরো ভবন নদীতে তলিয়ে যায় তা নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। বিদ্যালয়ের ভবনটি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

মিনাল দাস গুপ্ত নামে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, নদী ভাঙনের খবর শুনে ভয় করছে। পুরো ভবন ধসে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সংশ্লিষ্টদের এখনই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।

আবুল কাশেম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, কয়েক বছর আগে ভাঙনরোধে জেলা পরিষদ থেকে গার্ডওয়াল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এবার বৃষ্টিতে পানির তীব্র স্রোতে গার্ডওয়ালের অস্তিত্ব নেই।

করিম উল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম বাছির ভূঞা বলেন, নদী ভাঙনের কারণে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এটি একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাঈন উদ্দিন আজাদ বলেন, বর্তমানে ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নদীর তীরে ভাঙনরোধে টেকসই কাজ করা জরুরি। অন্যথায় পানির স্রোতে যেকোনো সময় ভবন ধসে পড়বে। ইতোমধ্যে ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভবনটিতে পাঠদান করা সম্ভব নয়, তাই পুনঃনির্মাণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা কামনা করছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নদী ভাঙনের কারণে ভবনের একটি অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। সেখানে পাঠদান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ফুয়াদ হাসান বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত স্থান সরেজমিনে গিয়ে দেখে এসেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে, শিগগিরই কাজ শুরু হবে। তখন নদী ভাঙনরোধ করা যাবে। 

এ ব্যাপারে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহীদুল ইসলাম বলেন, ভাঙন থেকে বিদ্যালয়ের ভবনটি রক্ষার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গেও কথা হয়েছে।

Side banner