সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার পালপাড়ায় চলছে প্রতিমা তৈরির ধুম। প্রায় ৭০-৭৫ বছর ধরে এখানকার কারিগররা প্রতিমা তৈরি করছেন। শুধু সিরাজগঞ্জ নয়, এখানকার প্রতিমা যাচ্ছে টাঙ্গাইল, পাবনা, নাটোর ও বগুড়াসহ আশপাশের জেলাগুলোর পূজামণ্ডপে।
শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সিরাজগঞ্জ জেলার ৫১১টি মন্দিরে চলছে প্রস্তুতি। পালপাড়ার কারিগররা দিনরাত পরিশ্রম করে তৈরি করছেন দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, গণেশ ও কার্তিকের প্রতিমা। গত তিন মাস ধরে টানা কাজ করছেন তারা। শুধু পুরুষ নয়, বাড়ির নারী, শিশু, ছাত্রছাত্রী, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এতে অংশ নিচ্ছেন। কেউ প্রতিমা গড়ছেন, কেউ সাজের কাজ করছেন সব মিলিয়ে যেন এক উৎসবের পরিবেশ।
বর্তমানে প্রতিমার কাঠামো তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। চলছে রঙ ও সাজসজ্জার কাজ। পালপাড়ার ১৩টি বাড়িতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এবার প্রায় ১৫০টি মণ্ডপের জন্য প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি বগুড়া, পাবনা ও রংপুর থেকেও কারিগর এসেছেন। তাদের দৈনিক ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা মজুরি দেওয়া হচ্ছে, সঙ্গে খাবার ও থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্রী নিপা রাণী পাল বলেন, খরচ অনেক বেড়েছে, কিন্তু আমাদের কাজের দাম বাড়ে না।
টাঙ্গাইল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গৌড় পাল বলেন, বাবাকে সাহায্য করতে এসেছি। কষ্ট হলেও ভালো লাগে, কারণ আমাদের প্রতিমা দূরের মণ্ডপেও শোভা পায়।
অভিজ্ঞ কারিগর ভজো পাল বলেন, বাঁশ, কাঠ, সুতলির দাম অনেক বেড়েছে। কিন্তু প্রতিমার দাম ঠিকভাবে পাই না। সরকারের কাছে অনুরোধ আমাদের জন্য সোলার লাইট ও ভালো রাস্তার ব্যবস্থা করা হোক। একসাথে কাজ করার জায়গাও নেই। একটি শেড থাকলে ভালো হতো। বৃষ্টি হলে কষ্ট করে কাজ করতে হয়।
স্থানীয় সমাজসেবক মো. আলিম খান বলেন, এখানে প্রতিমা রাখার ভালো শেড ও রাস্তা নেই। প্রতিমা সরবরাহের সময় ট্রাফিক সহায়তা থাকলে ভালো হতো।
পূজা উপলক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের একাধিক টিম পালপাড়ায় টহল দিচ্ছে। কামারখন্দ থানার উপপরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান বলেন, কারিগরদের নিরাপত্তায় আমাদের টিম কাজ করছে। প্রতিমা যেন সুষ্ঠুভাবে সরবরাহ করা যায়, সে ব্যবস্থাও নিচ্ছি।
আপনার মতামত লিখুন :