ঢাকা শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৪ আশ্বিন ১৪৩২

খানাখন্দ আর উঁচু-নিচু ঢিবি, ভোগান্তির নাম পালবাড়ি-মনিহার মহাসড়ক

দৈনিক নতুন সংবাদ সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৫, ১২:৪৩ পিএম খানাখন্দ আর উঁচু-নিচু ঢিবি, ভোগান্তির নাম পালবাড়ি-মনিহার মহাসড়ক

যশোর শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পালবাড়ি-মনিহার মহাসড়ক দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় বেহাল হয়ে পড়েছে। প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটি এখন চলাচলের জন্য খুবই অনুপযোগী। খানাখন্দ, উঁচু-নিচু ঢিবি ও গর্তের কারণে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এ কারণে যানজটও এখন এই সড়কের নিত্যদিনের চিত্র।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের বিভিন্নস্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ঘোষপাড়া, কাঁঠালতলা ব্রিজ সংলগ্ন মহাসড়কে উঁচু-নিচু ঢিবি ও খানাখন্দে ভরা। এছাড়া সাবেক মানসী সিনেমা হলের বিপরীতে পেট্রোল পাম্পের সামনে সড়কের অবস্থাও বেহাল। বৃষ্টির পর এসব গর্তে পানি জমে থাকে। ফলে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। সড়কটি যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত। প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন এই পথে চলাচল করে। কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থায় দুর্ভোগের শেষ থাকে না। বিশেষ করে ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, রিকশা ও সিএনজিচালিত যানবাহন গর্তে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আবার গর্তে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় সতর্কতার সাথে যানবাহন চলাচল করছে। এতে যানজট লেগে থাকে সড়কটিতে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার বছরখানেকের মধ্যেই ওই সড়কের বুকে অধিকাংশ অংশে ফুলে-ফেঁপে বড় ঢিবি হয়ে যায়। কোন কোন অংশে  খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। ঢিবিতে যানবাহনের নিচের অংশ বেঁধে যায়। এ রাস্তা দিয়ে খুলনা, ঢাকা, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ভারি যানবাহন চলাচল করে। এছাড়া নওয়াপাড়া বন্দরের সারবোঝাই ট্রাকও এ সড়ক দিয়ে যায় উত্তরবঙ্গে। রাস্তার করুণ অবস্থা হওয়ায় চালকদের গাড়ি চালাতে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে।

ট্রাকচালক সাগর হোসেন বলেন, এই রুট দিয়ে নড়াইল মাগুরা, ফরিদপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে ঢাকাগামী অসংখ্য গাড়ি যাতায়াত করে। অথচ রাস্তার করুণদশায় প্রতিদিন বিভিন্ন গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। সংস্কারে কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

ইজিবাইকচালক রাশেদুল ইসলাম বলেন, রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে আমাদের গাড়ি প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে। অনেক যাত্রী এই রাস্তা দিয়ে যেতে চান না। আমাদের আয় অর্ধেক কমে গেছে।

এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা তাহসিন রাফি বলেন, এ এলাকার রাস্তা টিকছে না। রাস্তা মেরামত করার কয়েক দিনের মধ্যেই পিচ উঠে বড় বড় গর্ত হয়ে যায়। এরপর সেসব স্থানে ইট বিছিয়ে  চলাচলের কিছুটা উপযোগী করা হয়। কিন্তু এখন রাস্তার সেসব অংশও নষ্ট হয়ে গেছে। কারণ রাস্তার পানি বের হওয়ার জন্য কোনো ড্রেনের ব্যবস্থা নেই। বৃষ্টির সময় পানি রাস্তার পাশে আটকে থাকে। এ জন্য পিচ নষ্ট হয়ে যায়। দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে মহাসড়কটি চলাচলের উপযোগী করা হবে বলে ব্যবসায়ী ও সড়কপথ ব্যবহারকারীরা আশা করছেন।

যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, পালবাড়ি-নিউমার্কেট মহাসড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বাজেট অনুমোদন হলে দ্রুত কাজ শুরু হবে। বর্তমানে মেরামত করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

Side banner