Daily Natun Sangbad
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাজারে মাজারে ঘুরেও শেষ রক্ষা হল না 

দৈনিক নতুন সংবাদ জানুয়ারি ২১, ২০২৩, ০৮:৩১ পিএম মাজারে মাজারে ঘুরেও শেষ রক্ষা হল না 

বগুড়ার নন্দীগ্রামের শীর্ষ মাদক কারবারি আব্দুর রউফ (৪২) গ্রেপ্তার এড়াতে ছদ্মবেশ ধারণ করে মাজারে মাজারে ঘুরে বেড়াতেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা হলো না। মুক্রবার রাতে পুলিশ তাকে নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিলের তিশিখালি মাজার থেকে গ্রফতার করেছে। 
আব্দুর রউফ নন্দীগ্রাম উপজেলার রণবাঘা সোনাপুকুর এলাকার মৃত আতাহার আলীর ছেলে।
পুলিশ জানায়, ২০২০ সালে আত্মগোপনের পূর্বে তার হালকা গোঁফ ছিল। সাড়ে তিন বছর পর তার বড় গোঁফের সঙ্গে লম্বা এবং জটা দাড়ি দেখা গেল। মাথার চুলগুলোও প্রায় দেড় ফুট লম্বা। গলায় বেশ কয়েকটি তাসবিহর সঙ্গে আছে তাবিজ এবং হাতে বালার জটলা। নিজেকে গোপন রাখতে চেহারার পরিবর্তন এনেছেন। অবশেষে পুলিশ চলনবিলের তিশিখালি মাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। গত শনিবার আদালতের মাধ্যমে রউফকে কারাগারে পাঠানো হয়।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) নন্দীগ্রাম থানার এএসআই আবুল কালাম আজাদ এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, একটি মাদক মামলায় তার বিরুদ্ধে ২০২০ সালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রিসিভ করেন তিনি। গত সাড়ে তিন বছর অনেক সোর্স কাজে লাগিয়েও রউফের অবস্থান জানতে পারেননি। এরমধ্যেই তার বিরুদ্ধে আরেকটি মাদক মামলার ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থানায় আসে। বেশ কয়েকজন সোর্সের মাধ্যমে জানতে পারেন, রউফ বর্তমানে চলনবিলের তিশিখালি মাজারে অবস্থান করছে। গত শুক্রবার সিংড়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে রণবাঘায় প্রথম স্ত্রী রেখে আত্মগোপনের পর আসমা নামের এক জটা পাগলিকে বিয়ে করে তিশিখালি মাজারেই থাকতো।
নন্দীগ্রাম থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, ২০১৬ সালের মে মাসে পৌর সদরের কলেজপাড়া এলাকায় পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে ১০পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ রউফকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। একই বছরের নভেম্বর মাসে সদর ইউনিয়নের রনবাঘা সোনাপুকুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে গাঁজাসহ এবং ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে রণবাঘা বাজার মসজিদ এলাকার একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে গাঁজাসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো।
আব্দুর রউফের প্রথম স্ত্রী আলেমা বেগম বলেন, আত্মগোপনের পরিকল্পনা করে ২০২০ সালে গ্রামের দাদন কারবারির কাছে বাড়ি বন্ধক রেখে ২০ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয় রউফ। আত্মগোপনের পর থেকেই সে স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখেনি। দাদন কারবারির চাপে অসহায় স্ত্রী একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি বন্ধকের টাকা পরিশোধ করেন। এনজিওর ঋণের কিস্তি টাকার জন্য বাড়ি ছেড়ে জামাদারপুকুর পলগাছা এলাকার এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মরিচক্ষেতে শ্রমিক হিসেবে কাজ নেন। ৯মাস দিনমজুরির কাজ করে সেই টাকায় এনজিওর ঋণও পরিশোধ করেছেন। আলেমা বর্তমানে রণবাঘায় নিজ বাড়িতে থাকেন এবং অন্যের জমি নিড়ানিসহ দিনমজুরির কাজ করে তার তিন বেলার খাবার জোটে।

Side banner