স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা দাবিতে আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ গোলাম নাফিজের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কবর জিয়ারত ও দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (০৪ আগষ্ট) সকাল ১১টায় রাজধানীর উত্তরখানের দোবাদিয়া এলাকার মধুবাগ গণকবরস্থানে শহীদ নাফিজের কবরের সামনে দাঁড়িয়ে মোনাজাত করা হয়।
এ সময় নৌবাহিনী কলেজের পক্ষ থেকে শহীদ নাফিজের কবরে পুষ্পস্তপক অর্পণ এবং দোয়া পরিচালনা করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনী কলেজ, ঢাকার প্রিন্সিপাল ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ইসমাইল মজুমদারসহ শহীদ পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয় মসজিদের ইমামসহ এলাকার গণমান্যরা।
দোয়া শেষে শহীদ গোলাম নাফিজের বাবা মো. গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, চব্বিশের আন্দোলনে আমার ছেলে দেশের মানুষের অধিকারের জন্য গিয়ে শহীদ হয়েছে। কিন্তু, আমার ছেলেসহ চব্বিশের যত শহীদ আছে; তাদের যারা গুলি করে মেরেছে- আমি তাদের বিচার চাই। এটাই আমার একমাত্র চাওয়া।
তিনি বলেন, আমার ছেলেটা বড় হয়ে নৌবাহিনীতে কাজ করতে চেয়েছিল। ও সেনাপ্রধান হতে চেয়েছিল। ছেলেকে হারিয়ে আমরা পঙ্গু হয়ে গেছি। এখন আমরা রাষ্ট্রের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার, জুলাই সনদ এবং শহীদ পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
মোনাজাত শেষে ক্ষোভ প্রকাশ করে শহীদ গোলাম নাফিজের ছোট মামা আবুল হাসেম যুগান্তরকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা সরকারের কাছে কোনো বিচার পাইনি। যারা হত্যার নির্দেশ দিয়েছে তারা পালিয়ে গেছে বুঝলাম। কিন্তু, যারা গুলি করেছে তারা তো ঠিকই বুক ফুলিয়ে হাটছে। এটা দেখলে আমাদের নিজেদেরই আর বাঁচতে ইচ্ছা করে না।
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত হন নাফিজ। এ সময় নাফিজের মাথায় বাংলাদেশের পতাকা বাঁধা ছিল। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাদানিতে করে নাফিজকে এক রিকশাচালক হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। নাফিজ বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাশ করে ঢাকার নৌবাহিনী কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়।
আপনার মতামত লিখুন :