ভোলার বোরহানউদ্দিনের উত্তর বাটামারা গ্রামে এক নারীকে জনসম্মুখে চুল কেটে জুতার মালা পরিয়ে শাস্তি দেওয়া নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত প্রধান অভিযুক্ত কবির হোসেন ও তার ৪ সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহান সরকার জানান, আইন হাতে তুলে নিয়ে কেউ শাস্তি দিতে পারেন না। নারীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করায় ও নারীকে নির্যাতন করায় ওই নারীর দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামিসহ ৫ জন গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হকের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোরহানউদ্দিন সার্কেল) অরিত সরকার গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করেন। ভিকটিম বাদী হয়ে রোববার রাতে বোরহানউদ্দিন থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চিহ্নিত ৩৩ জন ও অজ্ঞাত ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দেন।
মামলার প্রধান আসামি উপজেলার বাটামারা এলাকার মৃত আলাউদ্দিন পাটোয়ারীর ছেলে মো. কবির হোসেন (৪৮) ওই নারীকে জুতার মালা পরিয়ে দেয়; যা ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়।
গ্রেফতারকৃত অপর ৪ আসামি হলেন- মামলার ৬নং আসামি আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. রশিদ ওরফে মিঠাই রশিদ (৫৮), মো. নূরনবীর ছেলে ৭নং আসামি মো. মেহেদী হাসান (২১), আ. কুদ্দুসের ছেলে ৭নং আসামি মো. ইসমাইল (২৫), মৃত তোজন আলীর ছেলে মামলার ৯নং আসামি মো. সিরাজ মিরাজ। তারা সবাই কবির হোসেনের নেতৃত্বে ওই নারীর ওপর নির্যাতন করেন এবং মাথার চুল কেটে দিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দিয়ে তা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করে। গ্রেফতারকৃত সবার বাড়ি বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে।
মামলার অপর আসামিদের গ্রেফতার করা হবে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
স্থানীয়রা জানান, পরকীয়ার অভিযোগ এনে ওই নারীকে শাস্তি দেন এলাকার প্রভাবশালী কবির হোসেন গংরা। স্বামী পরিত্যক্ত ওই নারী উপজেলার বড়মানিকা ইউনিয়নের একই এলাকার বাসিন্দা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ পেলে তোলপাড় শুরু হয়। এ সময় বিষয়টি পুলিশ সুপারের নজরে আসে। তিনি তাৎক্ষণিক ওই নারীকে উদ্ধার করার নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে রাত থেকে অভিযান শুরু হয়। আহত ওই নারীকে থানায় এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। রাতে ওই নারীর দায়ের করা অভিযোগে অভিযুক্তদের আসামি হিসেবে গ্রেফতার করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বড়মানিকা ৫নং ওয়ার্ডের মো. কবির হোসেন নিজ হাতে ওই নারীর গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন। এ সময় তার সঙ্গে আরও কয়েকজন উপস্থিত থেকে ভিডিও ধারণ করতে দেখা যায়। কয়েকজনকে উল্লাস করতে দেখা যায়। এমন কাণ্ড বন্ধ করতে এগিয়ে যান কেউ।
আপনার মতামত লিখুন :