সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের লক্ষ্যে সাংবাদিক নীতিমালা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ আশ্বাস দেয় ইসি। ওই বৈঠকে নির্বাচন কমিশন নিয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ‘রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) পক্ষ থেকে সাংবাদিক/গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নীতিমালায় ব্যাপক সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, তাহমিদা আহমদ ও আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। আরএফইডি সভাপতি কাজী জেবেল মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের জন্য প্রস্তাবিত নীতিমালা উপস্থাপন করেন এবং তা ইসির কাছে হস্তান্তর করেন। আর সঞ্চালনা করেন আরএফইডির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৩ জুলাই সাংবাদিক/গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নীতিমালা-২০২৫ জারি করে ইসি। এতে ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার ও গোপন কক্ষের ভেতরে গিয়ে ছবি তোলায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিক সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন; পরে প্রিসাইডিং অফিসারকে অবহিত করে তথ্য, ছবি ও ভিডিও নেবেন; গোপন কক্ষের ছবি তোলা যাবে না; একসঙ্গে দুজনের বেশি সংবাদকর্মী ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না; ভেতরে থাকতে পারবেন সর্বোচ্চ ১০ মিনিট ও ভেতরে নির্বাচনি কর্মকর্তা, এজেন্ট বা ভোটারের সাক্ষাৎকার নেওয়া যাবে না- এমন বিষয় যুক্ত করা হয়। আরএফইডি নেতারা সার্বিক বিষয় নিয়ে ভিন্নমত, আপত্তি তুলে ধরে জানিয়েছেন, বিদ্যমান নীতিমালা বহাল থাকলে সাংবাদিকদের অবাধ তথ্যপ্রবাহ বিঘ্নিত হবে। সাংবাদিকদের এসব কড়াকড়ি আরোপ করলে অনিয়ম রোধে ইসির উদ্যোগের সব প্রচেষ্টা ভেস্তে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা সংশোধন করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, আপনারা-আমরা সবাই স্বচ্ছ নির্বাচন চাই। একটি ট্রান্সপারেন্ট ভোটের জন্য আপনাদের সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন। অন্যায় প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। কাজেই আপনাদের সহযোগিতা চাই। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে দাবি লিখিতভাবে দিয়েছেন। এটি পর্যালোচনা করে আপনাদের জন্য সহজ হয়, উভয়পক্ষের জন্য, মানুষের জন্য স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য, যেটা ভালো হয়, সেটা ইনশাআল্লাহ করা হবে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, আমি-আপনি-আপনারা কেউ কিন্তু আস্থার জায়গায় নেই। এই যে আস্থার সংকট এটা আমাদের জাতীয় সংকট। নীতিমালার খসড়া নিয়ে সাংবাদিকদের দাবি বিশ্লেষণ করে সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি। নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ বরাবরের মতো স্বচ্ছ নির্বাচনের লক্ষ্যে খোলা মাঠে ভোটের পক্ষে মত দেন।
নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমদ অবাধ তথ্যপ্রবাহের সুযোগ উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
আপনার মতামত লিখুন :