ঢাকা বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২

সনদ বাস্তবায়নে বিশেষজ্ঞের মতামত বিভিন্নভাবে অনেকে সমর্থন করেছেন

দৈনিক নতুন সংবাদ সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫, ০৮:০৬ পিএম সনদ বাস্তবায়নে বিশেষজ্ঞের মতামত বিভিন্নভাবে অনেকে সমর্থন করেছেন

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে বিশেষজ্ঞ প্যানেল যে মতামত দিয়েছেন, এটা আমরা বিবেচনা করতে পারি। ইতোমধ্যে বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে উপস্থাপন করেছি। বিভিন্নভাবে তাদের অনেকে এটা সমর্থন করেছেন, অনেকে এর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।

 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের ব্যাপারে বিভিন্ন পথ এবং পদ্ধতি নিয়ে তৃতীয় দিনের মতো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

 

আলী রীয়াজ বলেন, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে বিশেষজ্ঞ প্যানেল যে মতামত দিয়েছেন, এটা আমরা বিবেচনা করতে পারি এবং আমরা যে সুপারিশগুলো সরকারের কাছে পাঠাব, তার মধ্যে এটি একটি সুপারিশ হতে পারে। এটা সর্বসম্মতভাবে আমাদের বিশেষজ্ঞ প্যানেল দিয়েছেন। আমরা এটা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে উপস্থাপন করেছি। তারা বিভিন্নভাবে অনেকে এটা সমর্থন করেছেন, অনেকেই এর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন।

 

আলী রীয়াজ আরও বলেন, আপনারা জানেন যে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিষয়ে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে বিভিন্ন রকম মতামত পেয়েছিলাম এবং তার ভিত্তিতেই আগের দুই দিনের আলোচনা ছিল। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিষয়ে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। 

 

তিনি বলেন, আমরা ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল তৈরি করে তাদের মতামত নিচ্ছি এবং তাদের মতামতগুলো আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন সময় তাদেরকে অবহিত করছি। সেই বিবেচনা থেকেই আমরা গত বৈঠকগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যে ছয়টি প্রস্তাব এসেছিল, সেটি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম এবং বিশেষজ্ঞ প্যানেলের পক্ষ থেকে যে চারটি প্রস্তাব এসেছিল; সেগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছিলাম। তারই ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সর্বশেষ আলোচনায় এই ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে, যেগুলো সংবিধান সংশ্লিষ্ট নয়, সেগুলো অধ্যাদেশ এবং যে ক্ষেত্রে সরকারি আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব, সেগুলো তারা করবে। অর্থাৎ সরকারের পক্ষ থেকে যেন এই উদ্যোগটা নেওয়া হয়, আমরা সরকারকে সে বিষয়ে অবহিত করেছি এবং এসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

 

তিনি আরও বলেন, সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বাস্তবায়নের পথে আমাদের বিশেষজ্ঞ প্যানেল আগে দুটো বিষয়ের কথা বলেছিলেন। তার একটি হচ্ছে গণভোট, আরেকটি হচ্ছে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে এই দুটো বিষয়কে সমন্বিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ মতামত কমিশনকে তারা দিয়েছেন এবং সেটা আমরা আজকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে উপস্থাপন করেছি।

 

আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের কাছ থেকে যে সুপারিশ পাওয়া গেছে, তারা বলছেন যে ঐকমত্য কমিশনকে এই মতামত দিচ্ছেন এবং আমরা এটা সরকারের কাছে সুপারিশ হিসেবে হাজির করতে পারি। তারা বলছেন যে অন্তর্বর্তী সরকার একটি কনস্টিটিউশন অর্ডার, যেটা জুলাই ঘোষণার ২২ দফা অনুসরণ করে, ঘোষণা করতে পারে। এই কনস্টিটিউশন অর্ডারের মধ্যে থাকবে কোর রিফর্ম, যেগুলো মূলত সংবিধান সংশ্লিষ্ট যেসব সংস্কারের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো থাকবে। তারা আরও বলছেন, এই কনস্টিটিউশন অর্ডারটি পরবর্তী সময়ে— অর্থাৎ যেদিন পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই একই সময়ে গণভোট করা যেতে পারে এবং যে অর্ডারের কথা তারা বলছেন, কনস্টিটিউশন অর্ডারের মধ্যে ওই গণভোটের বিধানটি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। তৃতীয়ত, তারা বলছেন যে এই কনস্টিটিউশন অর্ডার ইমিডিয়েটলি ইফেক্টিভ হবে, যখন এটা ঘোষণা করা হবে। তবে, গণভোটের মধ্যদিয়ে যখন জনগণের সম্মতি পাওয়া যাবে, তখন থেকে এটাকে ভ্যালিডেটেড বলে মনে করা হবে এবং রেট্রোস্পেকটিভলি অর্থাৎ যখন থেকে আইনটা করা হয়েছে, তখন থেকে তার বাস্তবায়ন বিবেচনা করা হবে।

 

তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে কিছুটা সময় দিতে চাই, যেটা তারা অনুরোধ করেছেন, যাতে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে বিকল্পগুলো কমিয়ে আনতে পারে। আমরা চাই আমাদের পক্ষ থেকে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারকে একাধিক বিকল্প পদ্ধতি সুপারিশ করতে। 

 

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ থাকবে এবং আশা করছি অক্টোবরের শুরুর দিকেই আমরা আবার বসে খুব দ্রুততার সঙ্গে কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ তৈরি করে সরকারকে দিতে পারব।

Side banner