দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি আর চাপের মাঝেও জমজমাট হয়ে উঠেছে এশিয়া কাপ। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হয় সব দলের অধিনায়কদের নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন। সেখানে দেখা যায় ভিন্ন ভিন্ন রঙের দল, কিন্তু একটি বিষয়ে সবার অভিন্ন অনুভূতি ক্লান্তি।
সংবাদ সম্মেলনে লঙ্কান অধিনায়ক চারিথ আসালঙ্কা ক্লান্ত ভঙ্গিতে বলেন,'এই মুহূর্তে আমার খুব ঘুম পাচ্ছে। আপনার প্রশ্নের উত্তর যদি আগামীকাল দিতে পারতাম, ভালো হতো।'
তাঁর এই সরল স্বীকারোক্তিতে রুমজুড়ে হেসে ওঠেন উপস্থিত সাংবাদিকরা। পাশে বসে থাকা বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাসও যেন তাঁর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন।
জানা যায়, আসালঙ্কা নেমেই সরাসরি সংবাদ সম্মেলনে এলেও অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে শুধু ফটোসেশনের জন্য আবুধাবি থেকে দুবাই আসতে হয় লিটন দাস ও আফগান অধিনায়ক রশিদ খানকে। রশিদ খান তো সংবাদ সম্মেলন শেষ করেই ছুটতে হয় বিকেল তিনটার মধ্যে আবুধাবিতে পৌঁছাতে ম্যাচ প্রস্তুতির জন্য।
এ নিয়ে অধিনায়কদের মাঝেও কিছুটা ক্ষোভ দেখা গেছে। তবে রশিদ খান বলেছেন,'এই পেশায় এসব মানিয়েই চলতে হয়। খেলা শুরু হলেই সব ক্লান্তি ভুলে যাই আমরা।'
সংবাদ সম্মেলনে লিটন দাসের সামনে তুলে ধরা হয় বাংলাদেশের আগের তিনবার ফাইনালে ওঠার স্মৃতি ২০১২ ও ২০১৬ সালে ঘরের মাঠে এবং ২০১৮ সালে দুবাইয়ে। তবে প্রতিবারই শেষ হাসি হাসতে পারেনি দলটি। এবার কী লক্ষ্য?
জবাবে লিটন বলেন,'আমরা বেশ কয়েকবার রানার্সআপ হয়েছি। এখনও চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি। তবে অতীত তো ইতিহাস, আর ইতিহাস তৈরি হয় ভাঙার জন্য। আমরা ভালো খেলার চেষ্টা করব। ‘দেখিয়ে দেওয়া’র কিছু নেই, প্রস্তুতি ভালো হয়েছে, আমরা শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করব।'
বাংলাদেশের গ্রুপ ‘বি’-এর সূচি অনুযায়ী তাদের প্রথম ম্যাচ হংকংয়ের বিপক্ষে, বৃহস্পতিবার। এরপর আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ যথাক্রমে ১৩ ও ১৬ সেপ্টেম্বর।
সংবাদ সম্মেলনের মাঝখানে রশিদ খানের দুই পাশে বসেন ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ও পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগা। আসন্ন ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। প্রশ্ন ওঠে মাঠে আগ্রাসী মনোভাব থাকবে তো?
সূর্যকুমারের জবাব,'মাঠে নামলেই আগ্রাসন চলে আসে। এই খেলাটাই আগ্রাসী মনোভাব ছাড়া খেলা যায় না। আমরা মুখিয়ে আছি মাঠে নামার জন্য।'
অন্যদিকে তুলনামূলক শান্ত স্বভাবের সালমান বলেন,'প্রত্যেক ক্রিকেটারের নিজস্বতা আছে। আগ্রাসী হওয়ার জন্য আলাদা করে কোনো নির্দেশনা দিই না। আমাদের বোলাররা জানে, কখন কী করতে হবে।'
আগ্রাসনের মতো বিতর্কিত বিষয়ের চেয়ে ফেভারিট নিয়ে প্রশ্নে দুই দলই একমত। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফেভারিট বলে কিছু নেই।
সূর্য বলেন,'কে বলছে আমরা ফেভারিট? প্রস্তুতি ভালো থাকলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। ম্যাচ জেতার একমাত্র উপায় হলো নির্দিষ্ট দিনে ভালো খেলা।'
সালমানের কণ্ঠেও অনুরূপ সুর,'টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দু-একটা ওভারেই ম্যাচ ঘুরে যায়। তাই এখানে কোনো দলকেই ফেভারিট বলা ঠিক নয়।'
আপনার মতামত লিখুন :