ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে হঠাৎ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেন ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন। ২০২৩ সালের ২৩ জুন হঠাৎ করেই তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তিনি তার কয়েক হাজার সেনা নিয়ে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় প্রবেশ করেন।
এ সময় রোসতোভ-ওন-দন এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেন তিনি। এরপর সেনাদের নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন রাজধানী মস্কোর দিকে। তবে মস্কোর অদূরে এসে রুশ সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা এবং বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর অনুরোধে তিনি বিদ্রোহ থামিয়ে দেন।
তবে তার এ বিদ্রোহে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহের কয়েক মাস পর রহস্যজনকভাবে এক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন রাশিয়ার অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তি প্রিগোজিন।
এই ওয়ারলর্ডের ৮৫ বছর বয়সি মা ভিয়োলেত্তা প্রিগোজিনা রুশ সংবাদমাধ্যম ফোনটানকাকে জানিয়েছেন, ছেলে প্রিগোজিন তার মৃত্যুর কয়েকদিন আগে জানিয়েছিলেন, তিনি হয়ত মারা যাবেন। এরপর সত্যি সত্যি বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি।
তার মা বলেছেন, যখন তাকে শেষবার দেখেছিলাম তাকে খুব বিষন্ন দেখাচ্ছিল।
তিনি জানিয়েছেন, ছেলেকে তিনি সতর্ক করেছিলেন, যদি সে কোনো বিদ্রোহ করে তাহলে মানুষ তার পাশে এসে দাঁড়াবে না। সবাই ইন্টারনেটেই সমর্থন জানাবে। কিন্তু প্রিগোজিন জোর গলায় বলেছিলেন, মানুষ তার পাশে দাঁড়াবে।
রুশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রিগোজিন তার সেনাদের নিয়ে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় ঢুকেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তার ভাড়াটে সেনাদের যেসব সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কথা হয়েছিল, সেগুলো তারা দেয়নি।
তার ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার ওই সময় ইউক্রেনের ভুখণ্ড দখলে বড় ভূমিকা রেখেছিল।
ওই বিদ্রোহের সময় রুশ সেনাবাহিনীর একটি কেএ-৫২ অ্যাটাক হেলিকপ্টার এবং একটি সামরিক আইএল-বিমান ধ্বংস করেছিল।
তবে রুশ সেনাদের মধ্যে আর রক্তপাত না ঘটাতে তিনি মস্কো পৌঁছার আগেই বিদ্রোহ থামিয়ে দেন বলে জানিয়েছেন তার মা। এছাড়া পুতিনকে ক্ষমতাচ্যুত করার কোনো লক্ষ্যও প্রিগোজিনের ছিল না বলে দাবি করেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :