ঢাকা রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২

নুরের উন্নত চিকিৎসা নিয়ে সরকারের গড়িমসি স্পষ্ট: রাশেদ খান

দৈনিক নতুন সংবাদ | ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকাঃ সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম নুরের উন্নত চিকিৎসা নিয়ে সরকারের গড়িমসি স্পষ্ট: রাশেদ খান

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, সংগঠনের সভাপতি নুরুল হক নুরের উন্নত চিকিৎসা নিয়ে সরকারের গড়িমসি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি নুরের উন্নত চিকিৎসা না হয়, কিংবা তার কোনো ক্ষতি হয়, সেই দায় সরকার প্রধানকেই নিতে হবে।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গণঅধিকার পরিষদের এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রাশেদ জানান, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর হামলার শিকার হয়ে টানা ১৭ দিন ধরে হাসপাতালে শয্যাশায়ী। নুর বারবার হাসপাতালে থাকার কারণে মানসিকভাবে অস্থির হয়ে উঠেছেন। তিনি শনিবার হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিতে চাইলেও ডাক্তাররা জানিয়েছেন এখনো তার অবস্থা ছাড়ার মতো নয়।

নুরুল হক নুরের শারীরিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে রাশেদ খান বলেন, নুরের নাকের হাড়ভাঙা, চোয়াল ভাঙা, দাঁতের মাড়িতে আঘাত রয়েছে। ফলে তিনি শক্ত খাবার খেতে পারছেন না। মাথাতেও আঘাত লেগেছে। 

তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন-তাকে বিদেশে পাঠানো হবে। কিন্তু এখন আমরা সরকারের পক্ষ থেকে গড়িমসি লক্ষ্য করছি। সরকারের ওপর কোনো চাপ আছে কি না, অথবা আন্তর্জাতিক মহলের সামনে নুরের গুরুতর আহত অবস্থা যাতে প্রকাশ না পায়, এসব কারণেই বিলম্ব হচ্ছে কি না—আমাদের মধ্যে সেই সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, নুর কখনো বিদেশে চিকিৎসা নিতে চাননি। তবে দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, অতীতের হামলা-নৃশংসতার অভিজ্ঞতার কারণে এবার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, লন্ডন বা জার্মানিতে পাঠানো দরকার। কিন্তু সরকারের যে দেরি এবং উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে, সেটি অত্যন্ত হতাশাজনক। 

তিনি ঘোষণা দেন, সরকারের দয়ার ওপর আমরা নির্ভর করতে চাই না। আমাদের দলের পক্ষ থেকে নুরকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে।

নুরের ওপর হামলার ১৭ দিন পার হলেও সেনা ও পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন রাশেদ খান। 

তিনি বলেন, স্পষ্ট ভিডিও এবং সিসিটিভি ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এতে আমাদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে—আসলে বিচার হবে কি না।

তবে তিনি যোগ করেন, আমরা পুরো সেনাবাহিনী বা পুলিশ বাহিনীকে দোষারোপ করছি না। কেবল যারা সরাসরি জড়িত এবং যারা নির্দেশদাতা, তাদেরকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সরকার গঠিত তদন্ত কমিশনের ব্যাপারে রাশেদ খান জানান, কমিশন কাজ শুরু করেছে বলে শুনেছেন, তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। 

তিনি বলেন, প্রশাসনের অন্য একটি মাধ্যমে কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে। আমরা কমিশনকে বলবো, সরাসরি আমাদের সাথে বসুন। আমাদের কাছে যেসব প্রমাণ ও ভিডিও রয়েছে, সেগুলো আমরা আপনাদের দিতে চাই। আমরা আশা করি, এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কমিশন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।

সংবাদ সম্মেলনে রাশেদ খান সরকারের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নুর এখন হাসপাতালে শয্যাশায়ী, কিন্তু শুধু তিনি নন—আসলে পুরো বাংলাদেশ আক্রান্ত হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, আমরা এমন কর্মসূচি দেবো যেটা সরকার ঠেকাতে পারবে না। সেটি হতে পারে সচিবালয় ঘেরাও বা যমুনা ঘেরাও।

তিনি অভিযোগ করেন, এ হামলা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ ছাড়া ঘটেনি। তাই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় গণঅধিকার পরিষদের পরবর্তী আন্দোলনের পুরো দায় সরকারের উপর বর্তাবে।

Side banner