বাগেরহাটে আসন কমানোর প্রতিবাদে পাঁচ দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫) থেকে দু’দিনের সকাল সন্ধ্যা হরতাল পালিত হচ্ছে। জেলা বিএনপি, জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতৃবৃন্দরা।
আজ বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল অবরোধের সমথর্নে সড়কে সড়কে বেড়িকেট দিয়েছে। এই বেড়িকেট ও সড়ক-মহাসড়কে প্রতিন্ধকতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন কমিটির নেতারা।
খুলনা বাগেরহাট মহাসড়কের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, খুলনা-মাওয়া মহাসড়কের নওয়াপাড়া, কাটাখালি, মোল্লাহাট সেতু, বাগেরহাট পিরোজপুর মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাজারসহ জেলার অন্তত শতাধিক স্থানে সড়কের উপর গাড়ি ও বেঞ্চ রেখে অবরোধ করে রাখা হয়েছে।
এর আগে, সকাল ৮টার দিকে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক অফিস, জজ কোর্ট চত্বর ও নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা।
অন্যদিকে হরতালের কারণে বাগেরহাট জেলার সাথে দেশের অভ্যন্তরীণ ১০ জেলার সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দূরপাল্লার পরিবহনসহ অভ্যন্তরীণ ১৮টি রুটের সকল পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। যার ফলে ভয়াবহ ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়া ব্যবসায়ী ও দোকানদাররা হরতালের সমর্থনে দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন।
সম্মিলিত নাগরিক কমিটির নেতারা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশনের বিশেষ কারিগরি কমিটি বাগেরহাট জেলার চারটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার প্রস্তাব দিলে জেলার সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই প্রস্তাব বাতিল ও চারটি আসন বহল রাখার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন নতুন সীমানা নির্ধারন করে বাগেরহাটে তিনটি আসনের চুড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করলে তার প্রতিবাদে পাঁচ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা দেন তারা। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ ১০ ও ১১ তারিখ টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরু হয় বলে জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দরা।
সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির বাগেরহাট জেলা সমন্বয়ক ও সাবেক জেলা বিএনপি সভাপতি এম এ সালাম বলেন, ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাবনা প্রকাশ করলে সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মিলে সম্মিলিত কমিটি গঠন করে শুনানিতে অংশগ্রহণ করে চারটি আসন বহাল রাখার দাবি জানালেও ৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে কমিশন চূড়ান্তভাবে তিনটি আসন রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি এ সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক, বেআইনি ও জনবিরোধী উল্লেখ করেন। তিনি নির্বাচন কমিশনের এ প্রজ্ঞাপনে বাগেরহাটবাসীর হৃদয় বিদীর্ণ হয়েছে। অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে চারটি আসন বহাল রাখার দাবিও জানান তিনি।
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী বাগেরহাট জেলা আমির মাওলানা রেজাউল করিম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দ্রুত বাগেরহাটের চারটি আসন বহল রাখতে হবে, তা না হলে জেলার মানুষ আগামীকাল অবরোধসহ লাগাতার হরতাল পালন করবে। পাশাপাশি বাগেরহাট জেলার সাথে বাংলাদেশের সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :