রংপুরের পীরগাছায় অজানা ভাইরাসে গত এক মাসে দুই শতাধিক গরু-ছাগল মারা গেছে। এতে খামারিরা পড়েছেন চরম বিপাকে। আক্রান্ত পশুর শরীরে প্রথমে জ্বর দেখা দেয়, এরপর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেগুলো মারা যাচ্ছে।
স্থানীয় খামারিরা অভিযোগ করেছেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কার্যকর কোনো ভূমিকা নেই। ফলে তারা হাতুড়ে চিকিৎসকের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছেন। এরা কেউ কোনো প্রশিক্ষণ বা সনদ ছাড়াই গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা দিচ্ছেন। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদেরও পাওয়া যায় না; তারা দিনের বেশির ভাগ সময় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কাটান বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় খামারিরা জানান, অনন্তরাম গ্রামের মোজাফফর মিয়ার তিনটি গরু ও চারটি ছাগল, খোকা মিয়ার তিনটি গরু ও তিনটি ছাগল, শাহ আলম মিয়ার একটি গরু, শফিকুল ইসলামের দুটি ছাগল, আমিরুল ইসলামের দুটি ছাগল, দশগাঁ এলাকার খামারি মশিয়ার রহমানের একটি গরু এবং সরকারটারী গ্রামের খুরশিদ আলমের লক্ষাধিক টাকার একটি গরু মারা গেছে। এ ছাড়া উপজেলাজুড়ে গরু-ছাগল মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
অনন্তরাম গ্রামের বাসিন্দা মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘দুপুরে গরুর শরীরে জ্বর দেখে স্থানীয় হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করালাম। সকাল হতেই মারা গেল। এভাবে আমার তিনটি গরু ও তিনটি ছাগল মারা গেছে। বাধ্য হয়ে বাকি গরুগুলো পানির দামে বিক্রি করেছি। এখন গোয়াল খালি।’
খামারি মশিয়ার রহমান বলেন, ‘লাখ টাকার গরু বাঁচাতে পারলাম না। ওষুধ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি।’
আরেক খামারি রবিউল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘প্রাণিসম্পদ অফিসের কাউকে ডাকা যায় না। তারা ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। অফিসে গেলে দেখা যায়, কোম্পানির লোকজন ভরে আছে। কর্মকর্তারা মাঠে যাবে কবে?
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. একরামুল হক মন্ডল বলেন, ‘আমরা মাঠে যেতে পারি না, এটা সত্য। আমাদের জনবল কম। তবে আজ থেকে আমার দুটি টিম মাঠে চিকিৎসা দেবে এবং দুটি টিম ভ্যাকসিন প্রয়োগে কাজ করবে। আমরা গরু মারা যাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ টিম এলে বোঝা যাবে কী রোগে গরু-ছাগল মারা যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :