ঢাকা সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হত্যা : গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ

দৈনিক নতুন সংবাদ অক্টোবর ২০, ২০২৫, ০১:০৯ পিএম জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হত্যা : গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য মো. জোবায়েদ হোসেনকে হত্যার ঘটনায় আটক কলেজ শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাদে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

 

রোববার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির একটি ভবনের সিঁড়ি থেকে জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ভবনের একটি বাসায় এক ছাত্রীকে তিনি পড়াতেন। এ ঘটনার পর আটক ওই শিক্ষার্থীকে থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি—ওই ছাত্রীর সঙ্গে মাহির রহমান নামে আরেক কলেজ ছাত্রের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর মধ্যে গত একবছর ধরে ওই ছাত্রীকে টিউশনি করান জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদ। পড়ানোর সুবাধে জুবায়েদকে পছন্ত করতে শুরু করে ছাত্রী। এ বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি প্রেমিক মাহির। ধারণা করা হচ্ছে এ ধরনের ক্ষোভ থেকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। 

ওসি আরও বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজে শনাক্ত হওয়া দুইজনের মধ্যে একজন মাহির, অন্যজনের নামপরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে দুজনকেই আটকের জন্য রাত থেকেই একাধিক টিম কাজ করছে।

এদিকে জুবায়েদ হত্যার আগে ‘লাইভ লোকেশন’ শেয়ার করার ঘটনায় সন্দেহের তীর ওই ছাত্রীর দিকেও যাচ্ছে বলে মনে করছে তার সহপাঠীরা। এ বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে ওই ছাত্রী জানিয়েছেন, ‘স্যারকে ফোনে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কত দূরে আছেন। তখন স্যার নিজেই তার লোকেশন জানান এবং পরে নিজে থেকেই লাইভ লোকেশন শেয়ার করেন।’

মাহির রহমান রাজধানীর বোরহানউদ্দিন কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ওই ছাত্রীও একই এলাকার বাসিন্দা।

এদিকে, হত্যার দীর্ঘ সময় পার হলেও থানায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। এ বিষয়ে নিহত জুবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত বলেন, ‘আমরা ওই ছাত্রী, তার বাবা-মাসহ পাঁচজনের নামে মামলা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বংশাল থানার ওসি এতোজনের নামে মামলা না দেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেছেন, মেয়ের বাবা-মায়ের নাম দিলে মামলা নাকি হালকা হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা তাদের নাম উল্লেখ করেই মামলা দিতে চাই। আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।’

মামলার বিষয়ে ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যাদের নামে মামলা দিতে চায়, আমরা তা নেব। তবে তাদের বলেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিতে।’

এর আগে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তারা তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করে রাখেন। রোববার রাত ১১টার দিকে পুলিশ ছাত্রী বর্ষাকে হেফাজতে নেয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরও পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

হত্যার শিকার জুবায়েদ আহমেদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

জানা যায়, জুবায়েদ আহমেদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন।

গত এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানিটোলার একটি বাসায় ওই ছাত্রীকে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন। তিনি ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

Side banner