ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২

বিক্ষোভের জন্য যাদেরকে দায়ী করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী

দৈনিক নতুন সংবাদ | ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকাঃ সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫, ০১:৫৪ পিএম বিক্ষোভের জন্য যাদেরকে দায়ী করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী

নেপালে বিক্ষোভের জন্য বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহলকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। সেই সঙ্গে সোমাবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ১৯ জন নিহতের এবং শতাধিক আহতের ঘটনায় গভীর শোকও জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক শেষে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। 

অলি বলেন, বিক্ষোভে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহলের লোক ঢুকে পড়েছে। আন্দোলনের নামে ভাঙচুর, নৈরাজ্য, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালাচ্ছেন তারা। সরকার দাবি মেনে নিলে আর বিক্ষোভ পরিস্থিতি থাকে না; কিন্তু আমরা দেখছি যে, আন্দোলনের সংগঠকরা একাধিকবার তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচিকে সফল ঘোষণা করে লোকজনকে ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন, তারপরও সহিংসতা, লুটপাট ভাঙচুর কমছে না।

প্রসঙ্গত, গত বছর নেপালের সুপ্রিম কোর্ট দেশটিতে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। হাইকোর্টের সেই নির্দেশের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমগুলোকে নিবন্ধনের জন্য গত ২৮ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল।

কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও সরকারিভাবে নিবন্ধন না করায় ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে এ নিষেধাজ্ঞা।

এদিকে, সরকারের এই নিষেধাজ্ঞা ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ করে দেশটির স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থী এবং তরুণ প্রজন্মকে। জেন-জি নামে পরিচিত এই তরুণ প্রজন্ম গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকেই সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

অবশেষে গত রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হয় আন্দোলন এবং সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) তা রীতিমতো উত্তাল হয়ে ওঠে। আজও রাজধানী কাঠমান্ডুতে কারফিউ অমান্য করে বিক্ষোভে নেমেছেন শিক্ষার্থী-জনতা। শুরুর দিকে এই বিক্ষোভে শীর্ষ দাবি হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি এলেও গতকাল এটি প্রায় পুরোপুরি সরকারবিরোধী আন্দোলনে মোড় নেয়। কাঠমান্ডুর বাণেশ্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত নিহত হন ১৯ জন, আহত হয়েছেন আরও শতাধিক।

বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে সোমবার পদত্যাগ করেছেন নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলিরও পদত্যাগের দাবি ওঠা শুরু করেছিল।

গতকাল রাতে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন অলি। সেই বৈঠকে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।

কিন্তু বিক্ষোভ শান্ত হওয়ার পরিবর্তে আরও উস্কে ওঠার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নেপালি ও আন্তর্জাতিক সংবাদামধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী কাঠমান্ডুর বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষো

টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে অলি বলেন, সরকার কখনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিরুদ্ধে ছিল না, এখনও নেই। আমরা শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে নেপালের আইন ও সার্বভৌমত্ব মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিলাম।

Side banner