‘বন্ধু তুমি, শত্রু তুমি’ – রেট্রো যুগের বাংলা সিনেমার এই গানটা চাইলে বাংলাদেশ আজ শ্রীলঙ্কাকে উৎসর্গ করতেই পারে। দিনদুয়েক আগের ‘বন্ধু’ শ্রীলঙ্কা যে আজ আবার ‘শত্রু’তে রূপ নিয়েছে!
শেষ সাত বছরে শ্রীলঙ্কা আর বাংলাদেশের লড়াইটা বাড়তি উত্তাপ ছড়ায়। সেটা মাঠে যেমন, মাঠের বাইরেও তেমন। শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের এই লড়াই নাম পেয়ে গিয়েছিল ‘নাগিন ডার্বি’। আবার বছর দুয়েক আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রথম বারের মতো দেখেছে টাইম আউটের মতো ঘটনা। যার রেশ গেল বছরের সিরিজেও ছিল বেশ করে।
মাঠের বাইরেও দুই দলের ভক্তদের মধ্যে সম্পর্কটা আদায় কাঁচকলায়। বিষয়টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পেজগুলোতে চোখ বোলালেই বুঝা যায়।
তবে সব বৈরিতা চুলোয় দিয়ে গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকে পুরো বাংলাদেশ ‘সমর্থক’ বনে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কার। কারণ একটাই, আফগানিস্তানের বিপক্ষে তাদের জয়ই যে সুপার ফোরের টিকিট পাইয়ে দিতে পারে!
কুশল মেন্ডিসের ঝোড়ো ফিফটিতে ভর করে সেটা শ্রীলঙ্কা করে দিয়েছে। নিজেরা তো শেষ চারে এসেছেই, বাংলাদেশকেও সাথে নিয়ে এসেছে এখানে। ‘বন্ধু’র কাজটা ভালোভাবেই সেরেছে শ্রীলঙ্কা।
তার আগে আবার ভিলেনসুলভ একটা কাজ করেছিল দলটা। বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছিল ৩২ বল হাতে রেখে, যা আবার লিটনদের শিবিরে বিদায়ের শঙ্কাও তৈরি করেছিল। সেই এক হারই যে নেট রান রেটটা ঋণাত্মক অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিল! তবে পরে আফগানিস্তানকে হারিয়ে সে গল্পের শোধবোধটা করে দিয়েছিল ‘বন্ধু’র মতো করে।
তবে সে বন্ধুই আজকের ‘শত্রু’। যদি ফাইনালে যাওয়ার জন্যও সমীকরণের খাতিরে আবারও এই শ্রীলঙ্কার দরকার পড়ে তখন ভিন্ন হিসেব, কিন্তু তার আগ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা সেই পুরোনো সে ‘শত্রুই’, যাদেরকে হারিয়ে নাগিন নাচন নাচা যায়।
সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে সেই শ্রীলঙ্কাই বাংলাদেশের সামনে। এবারের এশিয়া কাপের সবচেয়ে শক্তিশালী দুই দলের একটি এই লঙ্কানরা। তাদের বিপক্ষে লড়াইটা এবার একটু কঠিনই হতে চলেছে বৈকি!
গ্রুপ পর্বের ওই ম্যাচের আগে শ্রীলঙ্কা টুর্নামেন্টে এভাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেনি। এবার তাদের পেছনে থাকবে টানা তিন ম্যাচ জেতার, আফগানদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৭০ রান তাড়া করে জেতার আত্মবিশ্বাস। এমন দলের বিপক্ষে খেলতে তো একটু সমঝে চলতেই হয়!
আগের ম্যাচে নুয়ান তুষারার এক স্পেলেই উড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই তিনি সময়ের সাথে সাথে আরও ক্ষুরধার হয়েছেন। গেল ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিয়েছেন ৪ উইকেট। আজও তাকে খানিকটা দেখেশুনেই খেলতে হবে বৈকি!
এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের অভ্যাস বাংলাদেশের ভালোভাবেই আছে। এই তো মাসখানেক আগে তাদেরই মাটি থেকে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে দেশে ফিরেছিল বাংলাদেশ। সে স্মৃতি নিশ্চয়ই লিটনরা ভুলে যাননি!
বাংলাদেশ একটা জায়গায় সেই সিরিজের পুনরাবৃত্তি খুব করে চাইবে। লঙ্কার মাটিতে সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচে রীতিমতো উড়ে গিয়েছিল সফরকারীরা। এরপরের দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করেছিলেন লিটনরা। এশিয়া কাপেও প্রথম ম্যাচে পাত্তা পায়নি বাংলাদেশ। আজ সেই দলটার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ, আজ ডাম্বুলার পুনরাবৃত্তি ঘটুক, লিটন, তাসকিনরা নিশ্চয়ই সেটাই চাইবেন!
আপনার মতামত লিখুন :