মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেতে পারেন? এ প্রশ্ন এখন আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তবে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতি তার প্রকাশ্য সমর্থন এবং সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের কারণে নোবেল জেতার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তাদের মতে, ট্রাম্পের না পাওয়ার মতো কারণের তালিকা দীর্ঘ। ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করা, বৈশ্বিক বাণিজ্যে শুল্কযুদ্ধ সৃষ্টি এবং শান্তির মূলনীতির পরিপন্থি নানা পদক্ষেপই তার বিরুদ্ধে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
যদিও শুরু থেকেই সরাসরি কিংবা ইঙ্গিতে ট্রাম্প নিজেকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য বলে দাবি করে আসছেন। এমনকি তিনি দাবি করেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে অন্তত সাতটি যুদ্ধ তিনি থামিয়েছেন।
প্রতিবছর সংসদ সদস্য, অধ্যাপক, বিজ্ঞানী, পূর্ববর্তী নোবেল বিজয়ীসহ যোগ্য ব্যক্তিরা শান্তিতে নোবেলের জন্য মনোনয়ন দেন। নরওয়েজিয়ান পার্লামেন্ট নির্বাচিত পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি সেই মনোনয়ন যাচাই করে সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করে, যদিও তালিকাটি প্রকাশ করা হয় না।
তবু ট্রাম্পের পুনঃপুন উচ্চারণ করা নোবেল আকাঙ্ক্ষায় সবচেয়ে বড় বাধা হতে পারে গাজা ইস্যু। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতি তার সমর্থন ও সহায়তা নোবেল কমিটির চোখে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা নষ্ট করার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে রয়েছে।
নোবেল ইতিহাসবিদ অ্যাসলে সভেন বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নোবেল শান্তি পুরস্কার জেতার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি দাবি করেন, মৃত্যুর দৃশ্য পছন্দ করেন না, অথচ গাজায় চলমান গণহত্যাকে সমর্থন করছেন।
তিনি আরও যোগ করেন, আলাস্কায় ট্রাম্প ভ্লাদিমির পুতিনকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেও তার ওপর চাপ সৃষ্টি করেননি, বরং ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার সুযোগ তৈরি করেছেন। যা নোবেলের মূল দর্শনের পরিপন্থি।
শান্তি গবেষক নিনা গ্রেগার মনে করেন, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেছেন। পুরোনো মিত্রদের সঙ্গেও শুল্কযুদ্ধ শুরু করেছেন তিনি।
অনেক বিশেষজ্ঞই বলছেন, যদি ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হয়, তবে নোবেল কমিটির সুনাম দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডগুলো শান্তির মূলনীতির সঙ্গে একেবারেই সাংঘর্ষিক।
আপনার মতামত লিখুন :