মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের ক্রাফট কমপ্লেক্স শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দিনভর ভরে উঠেছিল বাংলাদেশের রঙ, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের আবেগে। প্রবাসী পরিবার, কূটনীতিক ও ব্যবসায়ী নেতাদের অংশগ্রহণে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ ফোরাম অ্যাসোসিয়েশন (এমবিএফএ) আয়োজিত বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং ফেস্টিভ্যাল মালয়েশিয়া (বিবিএফএম) রূপ নেয় এক বহুমাত্রিক উদযাপনে।
সকাল ১০টায় শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়। বিভিন্ন বয়সের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তোলে দেন বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়া। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নতুন ব্যবসায়িক ধারণা উপস্থাপন নিয়ে হয় ইনোভেটিভ আইডিয়া পিচিং সেশন। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।
দিনভর চলা উৎসবে ছিল ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কিং সেশন, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, আবৃত্তি, নৃত্য ও ঐতিহ্যবাহী পোশাকের ফ্যাশন শো। এতে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
বিকেলে উৎসব প্রাঙ্গণে আগমন করেন মালয়েশিয়ার রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্সেস অব জহুর তুঙ্কু হাজাহ মারিয়াম জাহারা। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পর উদ্বোধন হয় “বাংলাদেশ: ল্যান্ড অব স্টোরিস” বইয়ের। শিল্পীদের পরিবেশনা দুই দেশের বন্ধুত্ব ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনকে ভিন্ন মাত্রা দেয়।
প্রিন্সেস অব জহুর বাংলাদেশি প্রবাসীদের অবদানকে উচ্চ প্রশংসা করে বলেন, মালয়েশিয়ার উন্নয়নে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা আধুনিক `মালয়েশিয়ার অজ্ঞাতনামা নায়ক'। বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তারাও দুই দেশের ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বে আস্থার কথা তুলে ধরেন।
উৎসবে একাডেমিক এক্সেলেন্স, ব্র্যান্ড লিডারশিপ, কর্পোরেট ইমপ্যাক্ট, গ্রিন বিজনেস, সিএসআর ও কমিউনিটি এনগেজমেন্ট এবং ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ পুরস্কার দেওয়া হয় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে।
সন্ধ্যায় জমজমাট বাংলাদেশ নাইট-এ কণ্ঠশিল্পী মনির খানের পরিবেশনায় মেতে ওঠেন দর্শকরা।
আয়োজক এমবিএফএ’র সভাপতি প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিবিএফএম কেবল উৎসব নয়, এটি দুই দেশের সম্পর্কের সেতুবন্ধন। ফেস্টিভ্যাল ডিরেক্টর জাফর ফিরোজ জানান, “আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে মর্যাদার সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরা।”
বিবিএফএম ২০২৫ প্রমাণ করল—বাংলাদেশের গল্প কেবল শ্রম বা রেমিট্যান্স নয়, বরং সংস্কৃতি, ব্যবসা, উদ্ভাবন ও আত্মবিশ্বাসেরও গল্প।
আপনার মতামত লিখুন :